ফোন আপডেট করার নিয়ম – মোবাইল স্লো হলে কি করব
যে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী জানতে পারবেন- মোবাইল স্লো হলে কি করব, মোবাইল স্লো হলে করনীয়, মোবাইল ফাস্ট করার উপায়, মোবাইল ফ্লাশ মারলে কি হয়, বাটন মোবাইল রিসেট এবং ফোন আপডেট করার নিয়ম সহ বিস্তারিত তথ্য।
বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড ফোন আমরা সবাই ব্যবহার। বর্তমান সময়ের জন্য মোবাইল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা বর্তমানে কথা বলা থেকে শুরু করে অনেক কাজ করতে পারে। তাই মোবাইল বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস। কিন্তু এই ডিভাইসটি চিরদিনের জন্য নয়। অর্থাৎ একটি ফোন চিরদিনের জন্য ভালো থাকেনা। যেহেতু এটি মানুষের তৈরি। একটি ফোন ভালোভাবে যত্ন করে রাখলে তখন সেটি টেকসই হয়। বর্তমানে ফোন গুলোর মধ্যে এডভান্স অনেক রকমের কাজকর্ম করা যায়। এই সকল কাজগুলো মোবাইল স্লো করে দেয়। তাই মোবাইলের মাধ্যমে আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধাগ্রস্ত হয়। একটি ফোন স্লো হয়ে গেলে আস্তে আস্তে সেটা ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে যায়। তাই বুঝতেই পারছেন মোবাইল স্লো হলে কি হতে পারে।
মোবাইল স্লো হওয়ার কারণ
অবশ্যই মোবাইল স্লো হওয়ার পিছনে অনেক রকমের কারণ থাকে। তার মধ্যে অন্যতম কারণগুলো হচ্ছে-
অতিরিক্ত অ্যাপস এবং ফাইল: অনেকের ফোনে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস অথবা কোন ফাইল থাকে। যেগুলোর কোন প্রয়োজন নেই কিন্তু তারপরও ফোনে পড়ে থাকে। এই অ্যাপস অথবা ফাইলগুলো ফোন স্লো হওয়ার কারণ হতে পারে।
ব্যাক গ্রাউন্ডে অ্যাপস: অনেকেই ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যাপস চালু করে থাকেন। অথবা এমনও হতে পারে যে তিনি জানেনও না যে তার ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যাপস চালু রয়েছে। এর ফলে যেভাবে ফোন চার্জ শেষ হয় তেমনি আবার ইন্টারনেট ও শেষ হয়। আর ফোন গরম হবে এটাই স্বাভাবিক।
আরো পড়ুন..
বসে না থেকে এই apps গুলো দিয়ে 300 টাকা ইনকাম করুন – কাজ করা খুব সোজা
এপস আপডেট: অনেকেই ফোনের অ্যাপসগুলোকে আপডেট করেন না। সাধারণত যখন একটি ফোনে ইন্টারনেট স্বল্পতা থাকে তখন এইরকম হয়ে থাকে। তবে একটি ফোন ভালো রাখতে তার অ্যাপসগুলোকেও নিয়মিত আপডেট করতে হবে ।
ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার: ফোনে যদি ভাইরাস অ্যাটাক করে তাহলে সেই ফোনটি স্লো হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে যখন ভাইরাস যুক্ত ডিভাইসের সাথে কানেক্ট করা হয় তখন এই ঘটনা ঘটে।
ক্যাশ মেমোরি জমা হওয়া: ব্রাউজিং অথবা অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে ফোনের ক্যাশ মেমোরি জমা হয়। এক সময় এগুলো ব্রাশ করা না হলে ফোন স্লো হয়ে যায়। ্
ওএস আপডেট: ফোনের অপারেটিং সিস্টেম যদি আপডেট না করা হয় তাহলে ফোন স্লো হতে পারে।
ওভারহিটিং: অতিরিক্ত গরম তাপমাত্রার জন্য মোবাইল স্লো হয়ে যেতে পারে।
হার্ডওয়্যারের সমস্যা: অনেক ফোনের টেকনিক্যাল ভাবে হার্ডওয়ারের সমস্যা থাকে। সেই সকল ফোনে হ্যাং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
মোবাইল স্লো হলে কি করব
উপরোক্ত কারণগুলো একটু ফোন স্লো হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। তাই মোবাইল স্লো হয়ে গেলে প্রথম কাজ হচ্ছে কারণ খুঁজে বের করা। ফোন ভালোভাবে দেখে নিশ্চিত হওয়া এটা স্লো হওয়ার প্রধান কারণ কি। এর জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
অপ্রয়োজনে অ্যাপস মুছে ফেলা: প্রথমে আপনার ফোনে থাকা সকল অ্যাপস গুলোর সম্পর্কে জানবেন। এখানে কোন কোন অ্যাপস গুলো গুরুত্বপূর্ণ চিহ্নিত করবেন। তারপর অপ্রয়োজনীয় এ্যাপস গুলোকে ডিলিট করে দিবেন।
আরো পড়ুন..
অ্যাপস গুলোকে আপডেট করুন: পুরাতন অ্যাপস গুলোকে আপডেট করে রাখুন। না হলে ভাইরাস আক্রমণ করা সম্ভব না বৃদ্ধি পায়। মোবাইল স্লো হওয়ার জন্য দায়ী।
ক্যাশ এবং ডেটা ক্লিয়ার করুন: প্রতিনিয়ত ফোনের ক্যাশ ক্লিয়ার করুন। ফোনের সেটিংস অপশন থেকে Storage বা Apps থেকে clear cache করুন।
ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস অফ করুন: অনেক সময় নিজের অজান্তেই ফোনের অ্যাপসকে ব্যাকগ্রাউন্ড পারমিশন দিয়ে থাকি। উদাহরণ হিসেবে স্ক্রিন রেকর্ডার একটি ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস। এই সকল অ্যাপস গুলো ফোন থেকে তথ্য চুরি করতে পারে, ফোনের চার্জ দ্রুত শেষ করে, ফোনের ইন্টারনেট দ্রুত শেষ করে এবং ফোনকে দ্রুত স্লো করে দেয়। এটা বন্ধ করার জন্য সেটিংস এর Permission Manager থেকে Background permission এ গিয়ে অফ করতে পারবেন।
অপ্রয়োজনীয় ফাইল বা মিডিয়া ডিলিট করুন: আমাদের অনেকের ফোনেই অতিরিক্ত ভিডিও, ইমেজ পড়ে থাকে। যার মধ্যে কিছু অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলোকে ডিলিট করে দিবেন। আর বাকি ফাইলগুলোকে গুগল ড্রাইভের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারেন। এতে ফোনের উপর চাপ পড়বে না।
এন্টি ভাইরাস অথবা এন্টি মেলওয়ার ব্যবহার করুন: সাধারণত ভাইরাস অ্যাটাকের পর ফোনটি দ্রুত স্লো হয়ে যায় এবং একসময় চিরদিনের জন্য অফ হয়ে যায়। তাই এর সমাধান ও দ্রুত করতে হয়। তার চেয়ে ভালো হয় এন্টিভাইরাস অথবা এন্টি ম্যালওয়্যার ব্যবহার করবেন। তাহলে ভাইরাস এসে বেশিক্ষণ টিকবে না।
ফোন রিবুট করুন: একটি ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডের সকল কার্যক্রম এবং ক্ষতিকারক বিষয়বস্তু থেকে নতুনভাবে শুরু করার জন্য ফোন রিবুট করুন।
ফ্যাক্টরি রিসেট করুন: সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোর ব্যাকআপ নিয়ে ফোন রিয়েস্টাট করুন। তাহলে খুব সহজেই ফোনের ক্ষতিকারক বিষয়বস্তু এবং অপ্রয়োজনে বিষয়বস্তু ফোন থেকে দূর হবে।
উপরোক্ত কার্যক্রম গুলো ছাড়াও আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ওয়াইপ ক্যাশ পার্টিশন করা, লাইট ওয়েট অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা, ওভারহিটিং থেকে বিরত থাকা, অ্যানিমেশন কমানো এবং অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করা ইত্যাদি।
মোবাইল ফাস্ট করার উপায়
উপরোক্ত কাজগুলো করার মাধ্যমে একটি ফোন ফাস্ট করা যায়। সাধারণত অনেক রয়েছে যেগুলো এত কিছু করার পরও ফার্স্ট হয় না। তখন ওই সকল ফোনগুলোকে রিস্টার্ট করতে হয়। নিয়মিত ফোন আপডেট রাখতে হয়। তাহলে ফোন ফাস্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অনেক ফোনের কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা রয়েছে যার কারণে সেটি ফার্স্ট হবে না। সে সকল ফোনগুলোর জন্য মেকানিকের সাথে যোগাযোগ করা ভালো। চলুন জেনে নেই ফোন আপডেট করার নিয়ম
ফোন আপডেট করার নিয়ম
একটি ফোন আপডেট করার পর আপনি অনেক রকমের সুবিধা পেতে পারেন। যেমন- নতুন ফিচার, সিকিউরিটি প্যাচ এবং বাগ ফিক্স ইত্যাদি। যা আপনার ফোনের নিরাপত্তা ও পারফরম্যান্স বাড়ায়। সাধারণত যেভাবে একটু ফোন আপডেট করা হয় তা দেখুন। ফোন আপডেট করার নিয়ম
অ্যান্ড্রয়েড ফোন রিস্টার্ট করার নিয়ম
- আপনার ফোনে ওয়াইফাই কানেকশন করুন।
- তারপরে আপনার ফোনের Settings > System > System update বা Software update অপশনে যান।
- আপডেট করতে Check for update অপশনে ক্লিক করুন।
- এবার আপডেট করতে সক্ষম হলে Download and Install অপশনে ক্লিক করুন।
- এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে ফোনটি পুনরায় রিস্টার্ট হবে। এবং ফোনের গতিবেগ বৃদ্ধি পাবে।
আইফোন রিস্টার্ট করার নিয়ম
- প্রথমে আপনার ফোনে ওয়াইফাই কানেক্ট করুন
- এরপর Settings > General > Software Update এ যান।
- Update চেক করুন
- Download and Install অপশনে ক্লিক করুন।
- প্রয়োজন হলে আপনার ফোনের পাসকোড দিন।
- এবার কিছুক্ষণ পর আপনার ফোন অটোমেটিক রিস্টার্ট হয়ে যাবে। এবং ফোনের স্পিড বৃদ্ধি পাবে।
আরো পড়ুন..
মোবাইল ফ্লাশ মারলে কি হয়
মোবাইল ফ্লাশ মার ার মাধ্যমে মোবাইলের সকল সিস্টেম আপডেট করতে পারবেন। এবং মোবাইলের কিছু ত্রুটি দূর করতে পারবে। কিছু আপডেটের সফটওয়্যার ইন্সটল করতে পারবেন। কোন কারনে ফোন ব্রিক হয়ে গেলে তা ঠিক করতে পারবেন। মোবাইলে পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করতে পারবেন। নতুন ফিচার যোগ করতে পারবেন।
তবে মোবাইল ফ্লাশ মারার মাধ্যমে কিছু ক্ষতি হতে পারে। ফোনের ডেটা মুছে যায়। অনেক সময় ফোনের সঠিকভাবে রিস্টার্ট না মারার ফলে ব্রেকিং হওয়ার সম্ভাবনা। রিস্টার্ট করার মাধ্যমে ফোনের ওয়ারেন্টি হারাবেন। সঠিকভাবে ফ্লাস না করলে ফোনের নিরাপত্তা হারাতে পারে।
ফ্ল্যাশ করতে করনীয়
ব্যাকআপ: একটি ফোন ফ্লাশ মারার ফলে তার তথ্য হারাতে পারে। তাই সেগুলো ব্যাকআপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
ডাউনলোড: সঠিক ফার্মওয়্যার বা রম ডাউনলোড করুন।
ফ্ল্যাশ টুল: মোবাইল ফ্লাশ মারার জন্য একটি সুন্দর টুল ব্যবহার করে। সঠিক টুল ডাউনলোড করবেন।
USB ড্রাইভার: ফোনের জন্য প্রয়োজনীয় USB ড্রাইভার ইনস্টল করুন।
ফ্ল্যাশ করা: ফ্ল্যাশ টুল দিয়ে ফোনের ফার্মওয়্যার ফ্ল্যাশ করুন।
বাটন মোবাইল রিসেট
বাটন মোবাইল রিসেট করার মাধ্যমে ফোনের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারবেন। অর্থাৎ একটি ফোন নতুন ক্রয় করার সময় যে সিস্টেমে থাকে সেই সিস্টেমে চলে আসবে। বাটন মোবাইল রিসেট করার জন্য।
- প্রথমে বাটন মোবাইলের লাল বাটনটিতে প্রেস করে ধরে রাখুন।
- এরপর Restart/ reset নামক অপশন পাবেন। সেটার উপরে বাটন রেখে প্রেস করুন। অনেক ফোনে এই অপশনটি খুঁজে পাওয়া যায় না। তখন অপশনটি মোবাইলের সেটিং অপশনে খুজে পাবেন।
সতর্কতা: রিসেট করার মাধ্যমে ফোনের যাবতীয় তথ্য হারিয়ে যেতে পারে। এজন্য ফোনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো সংরক্ষণ করে রাখবেন। আর সাধারণ কোন সমস্যা সমাধানে সফট রিসেট করতে পারেন ।
সফট রিসেট করার নিয়ম
সফট রিসেট করার মাধ্যমে ফোনের কোন তথ্য ডিলিট হবে না। এবং ফোনের কোন সেটিংস পরিবর্তন হবে না। যখন ফোনে কোন সাধারণ প্রবলেম হয় (যেমন- চার্জ প্রব্লেম) তাহলে সফট রিসেট করতে পারেন।
- সফট রিসেট করার জন্য প্রথমে আপনাকে বাটন ফোনটি বন্ধ করতে হবে। এবং ফোনের ব্যাটারি খুলতে হবে।
- প্রায় দশ মিনিটের মত অপেক্ষা করে ব্যাটারীটি পুনরায় লাগান এবং ফোনটি চালু করুন।
এভাবে সফট রিসেট করার মাধ্যমে বাটন ফোনের সাধারণ সমস্যা দূর করতে পারবেন।
ট্যাগ: মোবাইল স্লো হলে করনীয়, মোবাইল স্লো হলে কি করতে হবে, ফোন ফাস্ট করার উপায়, ফোন অন করার উপায়, নতুন মোবাইল চালু করার নিয়ম, mobile slow working
2 thoughts on “ফোন আপডেট করার নিয়ম – মোবাইল স্লো হলে কি করব”