ভাইরাসের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য ভাইরাস। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি না। কারণ ভাইরাস এতটাই ক্ষুদ্র যে সেটাকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া দেখা যায় না। আমরা অনেকেই ইতিমধ্যে এই ভাইরাস সম্পর্কে জানি। সম্প্রীতি বিশ্বকাপে ছড়িয়ে পড়া এক আতঙ্কিত ভাইরাসের নাম ছিল করোনা ভাইরাস। যা কেরে নিয়েছে অসংখ্য মানুষের প্রাণ। সে হিসেবে আমরা অনেকেই ভাইরাসকে ক্ষতিকর হিসেবেই জেনে থাকি। তবে ভাইরাস আমাদের উপকারেও আসতে পারে। এই পোস্ট থেকে আমরা- ভাইরাস কাকে বলে , ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য, ভাইরাসের অর্থনৈতিক গুরুত্ব, ভাইরাসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবো।
ভাইরাস কাকে বলে
খালি চোখে দেখিনি তবে বিভিন্ন বই-পুস্তকে অথবা ভিডিওতে দেখেছি অনেকেই। ভাইরাস খুবই ক্ষুদ্র জীব। এমনকি অন্যান্য জীবাণুগুলো থেকেও ভাইরাস উক্তি মাত্রায় ক্ষুদ্র জীব। যা জীব কোষের মধ্যে প্রবেশ করে বংশবৃদ্ধি করে। সাধারণত একটি ভাইরাস জীব কোষের ভিতর প্রবেশ করে বংশবৃদ্ধি করার পাশাপাশি জীবের বিভিন্ন রকমের পরিবর্তন তৈরি করে। আর এই পরিবর্তনটি যেভাবে জন্য ক্ষতিকর এবং লাভজনক হতে পারে। তবে ভাইরাস জীবিত কোষের বাইরে নিজে নিজে বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। আবার এটি মৃত কোষের ভিতরে ও বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। অর্থাৎ এটি শুধু জীবিত কোষের ভিতরে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। অর্থাৎ ভাইরাস হচ্ছে পরনির্ভরশীল জীব। যেটাকে বইয়ের ভাষায় শোষক ও বলা যায়। আমাদের সর্দি-কাশ ি সহ কিছু রোগ ভাইরাসের কারণ হয়ে থাকে। আবার অনেক উপকার ও ভাইরাস কাজ করে।
আরো পড়ুন..
ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য
ভাইরাস খুবই ছোট তাই আমরা খালি তো কেটে দেখতে পারবো না। ভাইরাস দেখার জন্য আমাদের অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্য নিতে হবে। একটি ভাইরাস ২০ থেকে ৩০০ ন্যানোমিটার এর মধ্যে হতে পারে। ভাইরাস মৃত কোষে থাকতে পারে না, জীবিত কোষের বাইরে থাকতে পারে না শুধুমাত্র জীবিত কোষের ভিতরে থাকতে পারে এবং বংশবৃদ্ধি করতে পারে। সাধারণত ভাইরাস ডিএনএ এবং আরএনএ নিয়ে গঠিত। ভাইরাস পরনির্ভরশীল হয়ে থাকে। এবং ভাইরাস বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি করতে পারে আবার উপকারে আসতে পারে।
ভাইরাসের উপকারিতা
সাধারণত আমাদের মাঝে ভাইরাসের উপকারিতাই বেশি ছড়িয়ে আছে। তবে ভাইরাসের কিছু উপকারিতা ও রয়েছে। যেমন – আমাদের অনেক ডাক্তারি চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভাইরাসের উপকারিতা রয়েছে। অনেক ভাইরাস আছে যেগুলো বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন হিসেবে তৈরি করা হয়। বিজ্ঞানীরা দুর্বল এবং মৃত ভাইরাসকে ব্যবহার করে এক ধরনের ভ্যাকসিন তৈরি করেন যা ভবিষ্যতে অন্যান্য ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এ প্রক্রিয়ার নাম শরীরের ইমিউন প্রক্রিয়া। জীব বিদ্যা ও জেনেটিক্স এর ক্ষেত্রে ভাইরাস গবেষণার কাজে অসংখ্য ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অর্থাৎ প্রাণীর জৈবিক কার্যাবলী সম্পর্কে ভাইরাসের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ধারণা পেয়ে থাকেন। বিজ্ঞানীরা ভাইরাস ব্যবহার করেন জিনথেরাপিটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপকার। এই জিন থেরাপির মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট জিনকে ক্ষতিকর কোষে প্রবেশ করিয়া প্রতিস্থাপন করে। তাছাড়াও বাইরে ছাড়া আরো কিছু সুবিধা বা উপকারিতা রয়েছে। যেমন কৃষি ক্ষেত্রে ভাইরাস ব্যবহার করে বিভিন্ন ঔষধ তৈরি করা হয়। ব্যাপক আমাকে নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।
আরো পড়ুন..
অতি তাড়াতাড়ি মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার উপায় – মোটা হওয়ার কার্যকরী উপায়
ভাইরাসের অপকারিতা
উপকারিতা অনুযায়ী ভাইরাসের উপকারিতাই বেশি। ভাইরাসের সবচেয়ে বড় অপকারিতা হচ্ছে এটা বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে। বর্তমান সময়ের মরণব্যাধি রোগ হচ্ছে এইচআইভি। যার প্রতিষেধক টিকা এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারেনি। এই রোগ ও ভাইরাসের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তাই ভাইরাস অধিক অপকারী। সম্প্রীতি প্রাণঘাতিক করণাভাইরাস সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। যেটা অসংখ্য মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। তাই বলা যাচ্ছে যে ভাইরাসের অনেক মারাত্মক অপকারীতা রয়েছে। ভাইরাসের মাধ্যমে ডেঙ্গু, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সহ অসংখ্য মারাত্মক ব্যাধি হতে পারে। আমরা জানি, ভাইরাস একটি পরনির্ভরশীল এবং শোষক। তাই এটি অন্য জীব কোষ কে সহজেই পরিবর্তন করে ফেলে। অর্থাৎ একটি মারাত্মক বাইরে আছে যদি মানবজীব কোষে প্রবেশ করে তাহলে ভাইরাসটি ওই মানব দেহকে পরিবর্তন করতে পারে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়। তাই বলা যায় ভাইরাস মানব দেহের জন্য অনেক মারাত্মক ক্ষতিকারক।
ভাইরাসের অর্থনৈতিক গুরুত্ব
অর্থনৈতিকভাবে ভাইরাসে ভালো এবং খারাপ দিক রয়েছে। ভালো দি খাচ্ছে, ভাইরাস বিভিন্ন গবেষণার কাজে ব্যবহার হয়। অসংখ্য বিজ্ঞানী বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের সন্ধান খোঁজেন। আবার অনেক প্রতিষেধক তৈরিতে ভাইরাস ব্যবহার হয়। তাই এই দিক দিয়েও ভাইরাস অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
তবে ভাইরাসের অর্থনৈতিক ভাবে কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। ভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্য সেবা খরচ বৃদ্ধি পায়। এবং মানুষ কর্মক্ষমতা কমে যায়। ফলে মানুষ আর্থিকভাবে সংকটে পড়ে যায়। বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার ফলে বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রীতিক করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশে লকডাউন জারি করা হয়। এর ফলে অনেক পর্যটন কেন্দ্রে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় আবার বিভিন্ন দেশের ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি হয়। তাছাড়াও শিক্ষা খাতে ভাইরাসের প্রভাবে অনেক রকমের ক্ষতি হয়।
আরো পড়ুন..
শেষ কথা: ভাইরাস
ভাইরাস আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি করে। তবে ভাইরাস মুক্ত পৃথিবী গড়া সম্ভব নয়। আমাদের উচিত ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। সঠিক সমস্যা ঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানো আটকাতে পারবেন। যাতে আমাদের অর্থনৈতিকভাবে এবং সকল দিক দিয়ে ভাইরাস ক্ষতি না করতে পারে।