ইলেকট্রনিক্স কাকে বলে? ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির নাম।
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে এমন প্রকৌশলী শাখা যেখানে ইলেকট্রনিক্স, বিদ্যুৎ শক্তি এবং চৌম্বক শক্তি নীতির উপর ভিত্তি করে কাজ করা হয়। ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর আওতায় ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি , বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, পাওয়ার সিস্টেম এবং কমিউনিকেশন ডিজাইন এর উপর কাজ করা হয়। এই পোষ্টের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে- ইলেকট্রনিক্স কাকে বলে, ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ কি, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং জব, ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বেতন এবং ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির নাম সহ বিস্তারিত আলোচনা।
বর্তমানে আমরা অসংখ্য ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের সাথে পরিচিত। বৈদ্যুতিক সংকেত প্রক্রিয়াকরণ ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে সকল টি বাইকগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলোকে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বলে। যেমন- কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং টেলিভিশন ইত্যাদি।
ইলেকট্রনিক্স কাকে বলে
আমরা অনেকেই ইলেকট্রনিক কাজের সাথে জড়িত। যেমন- মোবাইল বা কম্পিউটার ঠিক করা ইত্যাদি। তাই বুঝতেই পারছি ইলেকট্রনিক্স মূলত কি। একটি বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি শাখা যেটা ইলেকট্রন এবং তাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করে তাকে ইলেকট্রনিক্স বলা হয়।
ইলেকট্রনিক্সের কার্যপদ্ধতি: ইলেকট্রনিক্স মূলত ইলেকট্রন, নিউটন এবং প্রোটন এর সাথে সম্পর্কিত। একটি ডিভাইস ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক কার্যকলাপের মাধ্যমিক তথ্য আদান প্রদান করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ- মোবাইল , কম্পিউটার, রেডিও এবং টেলিভিশন ইত্যাদি।
ইতিহাস: ইলেকট্রনিক্স এর ইতিহাস খুব পুরানো ইতিহাস। ১৯০৬ সালে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক্স এর ব্যবহার হয়েছে। এখন পর্যন্ত ব্যাপকভাবে ব্যবহার চলতে আছে।
ব্যবহার: আমাদের জীবনের প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই ইলেকট্রনিক্স এর ব্যবহার রয়েছে। বিনোদন, চিকিৎসা , যোগাযোগ, শিক্ষা, বাণিজ্য , কার্যক্রম সহ আমাদের সাথে সম্পর্কিত সকল কাজেই ইলেকট্রনিক্স এর ব্যবহার রয়েছে। এখন ঘরে বসে টিভি দেখতেছি, এখানেও ইলেকট্রনিক্স এর ব্যবহার রয়েছে।
আরো পড়ুন..
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ কি
ইলেকট্রনিক্স এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে আমরা বিভিন্ন প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য টেকনিক্যালি ভাবে কাজ করে থাকে। এখানে সার্কিট, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, সিস্টেম ডিভাইস এবং বিকাশের সাথে জড়িত। চলুন জেনে নেওয়া যাক ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার এর কিছু কাজ।
সার্কিট ডিজাইন এবং উন্নয়ন
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার রা সার্কিট ডিজাইন নিয়ে কাজ করে থাকেন। তারা বিভিন্ন ধরনের এনালগ ও ডিজিটাল সার্কিট তৈরি করে থাকেন। এই সার্কিটগুলো বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার করা হয়। যেমন মোবাইল , কম্পিউটার ইত্যাদি।
আরো পড়ুন..
বসে না থেকে এই apps গুলো দিয়ে 300 টাকা ইনকাম করুন – কাজ করা খুব সোজা
সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার রা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সিস্টেম একত্রিত করে বিভিন্ন ডিজাইন তৈরি করে থাকেন। যেমন একটি ফোনের ডিজাইনে ডিসপ্লে, মাদারবোর্ড, ram ইত্যাদি উপাদান ব্যবহার করে ফোন তৈরি করে থাকেন।
উপাদান বাছাই এবং ব্যবহার
কোন প্রক্রিয়া তৈরি করার জন্য কোন বিষয়বস্তু প্রয়োজন তারা নির্ধারণ করে থাকেন। এবং তার সঠিক ব্যবহার করে থাকেন। যাতে ভবিষ্যতে কোন টেকনিক্যাল প্রবলেম না হয়।
ট্রাবলশুটিং এবং সমাধান
ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস গুলোতে বিভিন্ন সমস্যা লেগেই থাকে। প্রতিনিয়তন নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হয়। তাই ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারের অন্যতম কাজ বিভিন্ন ট্রাবরশুটিং এর সমাধান করা।
উপরোক্ত কাজগুলো ছাড়াও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের আরো কিছু কাজ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে উৎপাদন এবং মান নিয়ন্ত্রণ আবার গবেষণা এবং উন্নয়ন ।
আরো পড়ুন..
ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির নাম
ইতিমধ্যে আমরা বুঝতে পেরেছি যে আমাদের প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত অধিকাংশ ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির অন্তর্ভুক্ত। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে আমরা এগুলা ব্যবহার করে থাকি। চলুন দেখে আসি কোন কোন ক্ষেত্রে কোন ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র গুলা ব্যবহার করি।
আরো পড়ুন..
ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির মধ্যে অনেক ধরণের ডিভাইস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজকে সহজ এবং আরও কার্যকর করে তুলেছে। এখানে কিছু সাধারণ ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির নাম উল্লেখ করা হলো:
দৈনন্দিন জীবন ব্যবহার: টেলিভিশন,ওয়াশিং মেশিন, রেফ্রিজারেটর, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেকট্রিক কেটলি, এয়ার কন্ডিশনার, ব্লেন্ডার/মিক্সার, রাইস কুকার, গিজার এবং ডিশওয়াশার ইত্যাদি।
যোগাযোগ এবং বিনোদন: মোবাইল ফোন, কম্পিউটার/ল্যাপটপ, রেডিও, ট্যাবলেট, হেডফোন/ইয়ারফোন, গেমিং কনসোল, স্পিকার ইত্যাদি।
স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা: ব্লাড প্রেসার মনিটর, ডিজিটাল থার্মোমিটার, স্মোক ডিটেক্টর, সিকিউরিটি ক্যামেরা, অক্সিমিটার, হিয়ারিং এইড, গ্লুকোমিটার ইত্যাদি।
কাজের জন্য এবং প্রযুক্তি: প্রিন্টার, স্ক্যানার, ইলেকট্রিক ড্রিল মেশিন, সোল্ডারিং আয়রন, ডিজিটাল মাল্টিমিটার, প্লটটর, রাউটার, মডেম ইত্যাদি।
আরো পড়ুন..
উপরোক্ত যন্ত্র গুলা ছাড়াও বর্তমানে অসংখ্য ইলেকট্রনিক যন্ত্র রয়েছে যেগুলো আমাদের জীবনযাত্রাকে খুব সহজ করে তুলেছে।
ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং জব
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বর্তমানে ভালো রকমের সুবিধা রয়েছে। চলুন জেনে আসা যাক ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর কিছু চাকরি।
পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার: বিদ্যুৎ উৎপাদন, নকশা এবং বিতরণের রক্ষণাবেক্ষণ া অন্তর্ভুক্ত কাজ।
কন্ট্রোল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার: automation এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার নকশা তৈরি করা এই ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ।
ইলেকট্রিক্যাল ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার: বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস তৈরি করার জন্য যে নকশা তৈরি করা হয়। তাই মূলত ইলেকট্রনিক ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ।
রিনিউয়েবল এনার্জি ইঞ্জিনিয়ার: যে সকল শক্তি নবায়ন করা যায় এইরকম শক্তি নিয়ে কাজ করায় এই পর্যায়ে। সৌর বিদ্যুৎ অন্যতম।
আরো পড়ুন..
উপরোক্ত কাজ গুলো ছাড়াও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য আরো অনেক রকম ের কাজ রয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল মেইন্টেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল প্রজেক্ট ম্যানেজার, ইলেকট্রিক্যাল কনসালট্যান্ট, ইলেকট্রিক্যাল রিসার্চ ইঞ্জিনিয়ার, টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল সেলস ইঞ্জিনিয়ার এবং ইলেকট্রিক্যাল সেফটি ইঞ্জিনিয়ার অন্যতম।
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বেতন
সাধারণত শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন নির্ধারিত করা হয়। চলুন দেখে আসা যাক বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন।
প্রবেশ পর্যায়: প্রথম পর্যায়ে একজন স্বীকৃত ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার ৩০ হাজার টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন।
মধ্য পর্যায়: যখন একজন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার এর অভিজ্ঞতা তিন থেকে পাঁচ বছর হয়ে যায়। তখন সে সকল ইঞ্জিনিয়ার ৫০০০০ টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন।
সিনিয়র লেভেল: মোটামুটি ১০ বছরের অভিজ্ঞতা হলে ৮০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত বা তারও বেশি বেতন পেতে পারেন।
আরো পড়ুন..
আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট কতটা ইউনিক তা চেক করবেন কিভাবে? ওয়েবসাইট চেক করার tool.
বিদেশে: প্রথম পর্যায়েই বছরে $৬০,০০০ থেকে $৮০,০০০ পর্যন্ত আয় হতে পারে।
শেষ কথা: ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার এমন একটি ক্ষেত্র যেটা আমাদের প্রতিনিয়ত প্রয়োজন হয়। তাই বর্তমানে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার এর চাহিদা অনেক। তবে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার কাজটি কষ্টের কাজ হতে পারে। তাই ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের সতর্কভাবে কাজ করতে হয়।