ভিপিএন ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
ভিপিএন সম্পর্কে বর্তমানে আমরা অনেকেই জানি। যদিও ভিপিএন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও অনেকে বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার করে থাকেন। অনেকের মতে ভিপিএন ব্যবহার করা ও নিরাপদ। আবার অনেকে বিভিন্ন সুবিধার জন্য ভিপিএন ব্যবহার করে থাকেন। আসলেই কি ভিপিএন ব্যবহার করা ঠিক? এই পোস্ট থেকে বিস্তারিতভাবে তা জানার চেষ্টা করব। এই পোস্ট হাতে আমরা ভিপিএন কি, ভিপিএন কি নিরাপদ, ভিপিএন ব্যবহারের অসুবিধা এবং ভিপিএন ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
আমাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন কারণে ভিপিএন ব্যবহার করে থাকেন। প্রধানত ফ্রী ফায়ার কিংবা পাবজি গেম খেলার জন্য গেমাররা ভিপিএন ব্যবহার করে থাকেন। তাদের ইন্টারনেট স্পিড বৃদ্ধির জন্য। তাছাড়াও অনেক দেশ থেকে এ সকল গেম ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ঐ সকল দেশ থেকে এই গেমগুলো খেলা যাবে না। তাই গেমাররা ভিপিএন ব্যবহার করে এই গেমগুলো খেলে থাকে।
ভিপিএন কি
ইন্টারনেটের একটি ভার্চুয়াল টানেল হচ্ছে এই ভিপিএন। যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজে কম্পিউটারের ডাটা আদান প্রদান করতে পারবেন। ভিপিএন মূলত প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। vpn এর পূর্ণরূপ হচ্ছে virtual private network । ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক এর মানেই বুঝতে পারছেন আপনার ইন্টারনেট কানেকশনকে প্রাইভেট রাখবে। অনেকটা এইরকম যে, ভিপিএন আপনার পার্সোনাল আইপি অ্যাড্রেস লুকিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুবিধা দেবে। হলে আপনার ব্রাউজিং হিস্ট্রিতে লোকেশন চিহ্নিত করা সম্ভব হবে না। যদিও ভিপিএন ব্যবহার করা বাংলাদেশের জন্য বৈধ নয়। তাই ভিপিএন না ব্যবহার করাই ভালো।
ভিপিএন কি নিরাপদ
vpn হচ্ছে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। যার অর্থ হচ্ছে ভার্চুয়াল জগতে আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজিংকে প্রাইভেট করে রাখা হবে। অর্থাৎ আপনার ব্রাউজিং আইপি আপনি ছাড়া আর কেউই ট্র্যাক করতে পারবেনা।
সাধারণত আমরা যখন ইন্টারনেট ব্রাউজিং করা থাকে আমাদের সকল হিস্টোরি সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাছে জমা হয়। এভাবে সরকার আপনার সকল তথ্য জানতে পারবে। যার ফলে কেউ যদি কোন সাইবার অপরাধ করে থাকে সরকার খুব সহজেই তদন্ত করতে পারবে।
কিন্তু আপনি যখন ভিপিএন ব্যবহার করবেন সেটা আপনি ছাড়া কেউ জানতে পারবেন না। এমনটাও নয় তবে আপনার সার্ভিস প্রোভাইডার চাইলে সেটা জানতে পারবে।
অর্থাৎ ভিপিএন ব্যবহার করলে আপনার সকল ডাটা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে। vpn এর তুলনায় সাধারণভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করলে ডাটা চুরি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। সেজন্য আবার বিশ্বস্ত ভিপিএন প্রোভাইডার প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ এমন ভিপিএন ব্যবহার করবেন না যেটা আপনার তথ্য হ্যাকারদের হাতে তুলে দিতে পারে।
ভিপিএন ব্যবহার
ভিপিএন ব্যবহারের অনেক সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। ইতিমধ্যেই আমরা কিছু সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করেছি। এখানে সংক্ষিপ্তভাবে সুবিধা ও অসুবিধা গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব।
সুবিধা :
- অনলাইনে গোপনীয়তা রক্ষা করা যাবে । যা ইতিমধ্যে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজিং সম্পূর্ণভাবে সেইফ থাকবে। যার মাধ্যমে হ্যাকার এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আপনার ব্রাউজিং সনাক্ত করতে পারবে না।
- আইপি অ্যাড্রেস লুকানো যাবে। আমাদের প্রত্যেকের মোবাইলের এক একটি আইপি এড্রেস থাকে। আর এই আইপ্যাড দেশ শনাক্ত করে অনলাইনের অসংখ্য ব্যবহারকারীকে সনাক্ত করা হয় এবং সাইবার অপরাধ দমন করা হয়।
- অন্যান্য দেশের কনটেন্ট সমূহ দেখা যাবে । সাধারণত অনেক কনটেন্ট কিছু দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করে তোলা হয়। উদাহরণ স্বরূপ অনেক ক্যাসিনো গেমে বাংলাদেশে আইপি নিষিদ্ধ করা। অর্থাৎ ওই ক্যাসিনো প্ল্যাটফর্ম গুলো বাংলাদেশ থেকে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু সেটা ভিপিএন ব্যবহার করা সম্ভব।
অসুবিধা:
- ইন্টারনেটের গতি কমে যায়। অনেকেই মনে করে থাকেন ভিপিএন ব্যবহার করলেন ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি পায়। আসলে ভিপিএন ব্যবহার করলে ইন্টারনেটের গতি বরং কমে যায়।
- আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। যে সকল দেশের ভিপিএন নিষিদ্ধ। তারা ভিপিএন ব্যবহার করলে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা হতে পারে।
- সাইবার নিরাপত্তার হুমকি। ভিপিএন আপনার ডেটাকে নিরাপত্তা দিলেও তারাই আপনার নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ অনেক ভিপিএন প্রোভাইডারই গ্রাহকদের তথ্য হ্যাকারদের হাতে তুলে দেয়।
- ভালো সুবিধা নেওয়ার জন্য খরচ হতে পারে। সাধারণত ভিপিএন এর প্রিমিয়াম বাজারে ভালো সুবিধা পাওয়া যায়। তাই অনেকেই প্রিমিয়াম ভিপিএন ব্যবহার করতে চান। আর প্রিমিয়াম ভিপিএন ব্যবহারকর্তা আপনাকে টাকা খরচ করতে হবে।
ভিপিএন ব্যবহারের নিয়ম
বর্তমানে অসংখ্য বিপিএল রয়েছে যেগুলোর ব্যবহারের নিয়ম আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। এখানে আমি অন্যতম জনপ্রিয় ভিপিএন 1.1.1.1 এর ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে দেখাবো।
প্রথমে প্লে স্টোরে গিয়ে 1.1.1.1 লিখে সার্চ করলে। একটি ভিপিএন এপ্স আসবে সেটাকে Install করে নিন।
ইনস্টল হওয়ার পর ভিপিএনটি ওপেন করুন। এবার ভিপিএন ব্যবহার করার জন্য কিছু পারমিশন দিতে হবে।
সকল পারমিশন দেওয়ার পর ওপরের স্ক্রিনশট এর মত Disconnected দেওয়া থাকবে।
Connect করতে Disconnected এর উপরে থাকা সুইচটি অন করে দিন। তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিপিএন কানেক্ট হয়ে যাবে।
বিঃদ্রঃ ভিপিএন কানেক্ট করার আগে অবশ্যই ইন্টারনেট কানেকশন করতে হবে।