আমি এখন কোথায় আছি তা জানবো কিভাবে
অনেক সময় আমরা নতুন অচেনা কোন জায়গায় গিয়ে আটকে পড়ি। অথবা অচেনা কোন জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ নতুন অচেনা জায়গা হয় আমরা কিভাবে যাব সে সম্পর্কে জানতে চাই। অথবা আমরা যদি কোথাও গিয়ে হারিয়ে যাই তখন সেখান থেকে ফিরে আসার জন্য চেষ্টা করি। তখন সর্বপ্রথম আমাদের মনে একটা প্রশ্ন আসে। আমি এখন কোথায় আছি ? এই পোস্টে আমি এখন কোথায় আছি তা জানবো কিভাবে নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করো হবে।
ভূমিকাঃ বর্তমান লোকেশন
বর্তমান প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে আমরা এখন এক উন্নত বিশ্বে অবস্থান করছি। এই উন্নত বিশ্বে সকল ধরনের কাজকে প্রযুক্তি সহজ করে তুলেছে। তেমনি এক প্রযুক্তির আবিষ্কার হচ্ছে লোকেশন ট্রাকিং। একটি প্রক্রিয়া আপনার ডিভাইস ট্রাকিং করে আপনার লোকেশন বের করে দিবে।
আমাদের বর্তমান লোকেশন জানার জন্য তেমনি একটি প্রক্রিয়া হচ্ছে গুগল ম্যাপ। বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন ও কোম্পানি গুগল এর আওতাধীন গুগল ম্যাপ। এই আর্টিকেলে আমরা গুগল ম্যাপ সম্পর্কে এবং গুগল ম্যাপ দিয়ে লোকেশন ট্রাকিং করার পদ্ধতি দেখাবো। তাই আজকের পোষ্টের মূল বিষয় হচ্ছে আমি এখন কোথায় আছি তা জানবো কিভাবে নিয়ে।
গুগল ম্যাপ কি
গুগল কোম্পানি দ্বারা আবিষ্কৃত ২০০৫ সালের এই ম্যাপিং সার্ভিস চালু হয়। যার নাম দেওয়া হয় গুগল ম্যাপ। তখন থেকেই ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা ও সফলতা লাভ করতে এই পর্যায়ে এসেছে। বর্তমান সময়ে গুগল ম্যাপ খুবই জনপ্রিয় এবং প্রয়োজনীয় সার্ভিস।
আরো পড়ুন..
গুগল ম্যাপের প্রধান কাজ হলো মানুষের লোকেশন ট্রাকিং করে হেল্প করা। একটা সময় যখন মানুষ যে কোন স্থান খুঁজে পেতে অনেক কষ্ট হতো তা বর্তমানে গুগল ম্যাপ এর মাধ্যমে সহজেই করা যায়।
গুগল ম্যাপ মূলত একটি অ্যাপস এর মাধ্যমে কাজ করে। গুগল ম্যাপ এর অফিসিয়াল অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস এর নাম হচ্ছে maps । এটি যে কোন স্মার্টফোনের ডিফল্ট আকারে থাকবে। তাছাড়া এটি গুগল প্লে স্টোরে থেকেও ডাউনলোড করা যায়। গুগল ম্যাপ মূলত তিন ভাবে ম্যাপ দেখায়। স্ট্যান্ডার্ড ম্যাপ, স্যাটেলাইট ভিউ, স্ট্রিট ভিউ এবং হাইব্রিড ভিউ ।
বর্তমান সময়ে google ম্যাপ শুধু ম্যাপিং সার্ভিস দেয় না। পাশাপাশি বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, হোটেল এবং অন্যান্য সেবা সহজে খুজে পেতে সাহায্য করে। বর্তমানে একটি ২২৩ টি দেশে ম্যাপিং সার্ভিস দিয়ে থাকে।
গুগল ম্যাপ কিভাবে কাজ করে
গুগল ম্যাপ বিভিন্ন জটিলতার সাথে একাধিক যন্ত্রের মেশিনের সাহায্যে কাজ করে। এবং বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির আরো আবিষ্কার গুলো এর সাথে যুক্ত হয় নতুন নতুন সুবিধা দিয়ে থাকে। বর্তমান সময়ের গুগল ম্যাপ লোকেশন ট্রাকিংয়ের জন্য GPS (Global Positioning System), Wi-Fi এবং সেল টাওয়ার ডেটা প্রযুক্তি ব্যবহার করেন।
GPS: এই মাধ্যমে আপনি সরাসরি স্যাটেলাইটের সাথে কানেক্ট হওয়া লোকেশন গুলো খুজে পাবেন। যখন আপনার ফোনের জিপিএস চালু থাকে আপনার ফোন থেকে স্যাটেলাইটে সংকেত পাঠানো হয়। আর এই সংকেতনে যে আপনার লোকেশন নির্ধারণ করা হয়।
আরো পড়ুন..
Wi-Fi: আপনার ফোনে কানেক্ট হওয়া ওয়াইফাই এর তথ্য থেকে আপনার লোকেশন বের করা হয়। এখানে প্রথমে আপনার কানেক্ট হওয়া ওয়াইফাই লোকেশন বের করা হয়। আরে লোকেশন অনুযায়ী আপনার লোকেশন জানা হয়। এতে অনেকটা নির্মল এবং গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া।
সেল টাওয়ার ট্রায়াঙ্গুলেশন: প্রথম ও দ্বিতীয় পদ্ধতির ব্যর্থ হলে এই পদ্ধতিতে আপনার লোকেশন বের করা যেতে পারে। আপনার ফোন কানেক্ট হওয়া আশেপাশের টাওয়ার থাকলে ওই টাওয়ার অনুযায়ী আপনার লোকেশন বের করা হবে। এটি নির্ভুল হাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
আমার লোকেশন কোথায় এখন
আপনি এখন কোথায় আছেন তা জানতে হলে গুগল ম্যাপের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এর জন্য গুগল ম্যাপ এর অ্যাপস ব্যবহার করতে হবে। গুগল ম্যাপ বের করে লোকেশন ট্র্যাকিং করতে হবে। চলুন জেনে আসি লোকেশন ট্র্যাক করার নিয়ম ।
লোকেশন ট্র্যাক করার নিয়ম
লোকেশন ট্রাকিং করার জন্য নিচের পদক্ষেপ গুলো গ্রহন করবেন। google maps এর এপ্স ব্যবহার করে সহজে লোকেশন ট্র্যাক করা যায়।
আপনার ফোনে থাকা Maps অ্যাপসটি ওপেন করুন।
উপরের স্ক্রিনশটের দেখানো ‘?’ অপশনে ক্লিক করুন।
এবার আপনার লোকেশন পারমিশন চাইবে। Turn on অপশন এ ক্লিক করুন।
ব্যাস এবার দেখুন আপনার বর্তমান লোকেশন শো করছে। এভাবে আপনি যে কোন স্থানে আপনার লোকেশন সহজে বের করতে পারবেন।
আরো পড়ুন..
ভ্রমণের জন্য লোকেশন ট্র্যাকিং
আপনি যদি আপনার বর্তমান লোকেশন থেকে কোথাও ভ্রমণ করতে চান। তাহলে ওই লোকেশনে যাওয়ার প্রক্রিয়া, সময় এবং দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সহজে যেতে পারেন। এর জন্য নিচের পদক্ষেপ গুলো গ্রহন করুন।
প্রথমে উপরোক্ত নিয়মে আপনার লোকেশন বের করুন।
এবার উপরের স্ক্রিনশটে দেখানো তীর চিহ্নিত অপশন এ ক্লিক করুন।
প্রথমে আপনার লোকেশন এবং তার নিচে আপনি যেখানে যাবেন তার স্থানের নাম লিখুন। স্থানের নাম লেখার পর যে রেজাল্টগুলো আসবে তার সঠিক রেজাল্ট সিলেক্ট করুন।
বিঃদ্রঃ কিভাবে যাবেন তা সিলেক্ট করলে আনুমানিক সময় দেখতে পারবেন।
এবার দেখুন আপনি যে স্থানে যাবেন তার লোকেশন হাতে আপনার লোকেশন পর্যন্ত রাস্তা সম্পূর্ণ হাইলাইট হয়ে রয়েছে। দেখুন এখানে ২ মিনিট। অর্থাৎ প্রাইভেট কারে যেতে ২ মিনিট সময় লাগবে।
এভাবে আপনি চাইলে যে কোন স্থানের সহজে ভ্রমণ করতে পারবেন।
আমি এখন কোন গ্রামে আছি
এখন কোন গ্রামে আছেন তা জানা আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। যদি আপনি আপনার লোকেশন বের করতে পারেন। তাই উপরের নিয়ম অনুযায়ী লোকেশন বের করবেন।
লোকেশন বের করার পর লোকেশনের স্থানগুলো জুম করে দেখতে পারবেন। এখানে আপনার জেলা, বিভাগ, গ্রামসহ সকল ডিটেলস বের করতে পারবেন।
গুগোল আমার বাড়ি কোথায়
সাধারণত গুগল ম্যাপে জনপ্রিয় এবং বড় বাড়িগুলো ছাড়া ছোট ছোট বাড়ি আসবেনা। অর্থাৎ বড় বড় বাড়িগুলো সহজে নামসহ গুগল ম্যাপে দেখতে পারবেন। তবে ছোট বাড়িগুলো গুগল মাসে একটি চতুর্ভুজ আকারে দেখা যায়।
গুগল ম্যাপে আপনার বাড়ি কোথায় তা জানতে হলে আপনার বাড়ির নাম লিখে সার্চ করতে হবে। যদি তা গুগল ম্যাপে থাকে তাহলে অবশ্যই দেখতে পারবেন। তবে ছোট ছোট বাড়িগুলো খুঁজে পাবেন না। সেক্ষেত্রে অনেকে নিজেদের বাড়ির নাম google ম্যাপে সাবমিট করে থাকেন। এতে পরবর্তীতে বাড়ির নাম লিখে সার্চ করলে গুগলে সেটা দেখতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য:
গুগল ম্যাপ লোকেশন ট্র্যাকিং নিয়ে আজকের এই পোস্ট সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে যে কোন স্থান থেকে সহজেই ঘুরে আসা এবং চিহ্নিত করা যায়। তবে এই কাজগুলো করার জন্য আপনার অবশ্যই একটি স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে।