রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত

রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত

আস্সালামু আলাইকুম। আশা করি সকলে ভালো আছেন। Trickmi তে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমরা ‘রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত’ সম্পর্কে জানব। ‘রবিউল আউয়াল’ ইসলামের তৃতীয় মাস। রমজানের পর এটি অনেক ফজিলতপূর্ণ একটি মাস। এই মাসে মহানবি (স.) জন্মগ্রহণ করেন।তার মৃত্যুও হয়েছিল এই মাসে।এই মাসে অনেক জায়গায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।মাহফিলে নবীজির সিরাত আলোচনা করা হয়। এটি একটি বড় ইবাদত।এটি ঈমানের অংশও।তবে অনেকে না বুঝেই এই মাসকে কেন্দ্র করে অনেক হারাম কাজ করে ফেলে।

কোরআন-হাদিসে এই মাসের জন্য আলাদা কোনো আমলের বর্ণনা করা নেই। তাই কেউ যদি নিজেদের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের আমলের বর্ণনা দেয়, তা শরীয়তে বাড়াবাড়ি এবং হারাম কাজ।

মিলাদ মাহফিলে নবীজি(স.) এর শৈশব থেকে শুরু করে তার মৃত্যু পর্যন্ত যত ঘটনা, মানুষ কে ক্ষমা করার ঘটনা আলোচনা করা হয়।

এছাড়া, অনেক সুন্নত কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।এতে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি।এই আলোচনা সভায় অনেক শিশুরাও যায়।তাই তারা অনেক কিছু শিখতে পারে।তাই আমাদের হারাম কাজে লিপ্ত না হয়ে এই মাহফিলে যেতে পারি।

আরো পড়ুন..

জামায়াতে ইসলামী কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, ইতিহাস

এই মাহফিলের কোন আলোচনা শুনে যদি আমরা কোনো সুন্নত কাজ করতে পারি তাহলে অনেক সওয়াবও হবে।

মহানবি(স.) সোমবার জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তাই আপনি প্রতি সোমবার রোজা রাখতে পারেন। তবে মহানবি(স.) বৃহস্পতিবারও রোজা রাখতেন।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন- বৃহস্পতি ও সোমবার আল্লাহ তায়ালার সামনে বান্দার আমল উপস্থাপন করা হয়, তাই আমি চাই আমার আমল পেশ করার সময় আমি যেন রোজা অবস্থায় থাকি।-(সুনানে নাসায়ী, ২৩৫৮).

কেন ‘রবিউল আউয়াল ফজিলতপূর্ণ মাস’?

রমজান মাসের পরই ইসলামের ‘ফজিলতপূর্ণ মাস রবিউল আউয়াল’।এই মাসে ইসলামের অনেক বিশেষ ঘটনা ঘটেছিল যা খুবই স্বরণীয়।

নিচে তা উল্লেখ করা হলোঃ

এই মাসে(১২ রবিউল আউয়াল) মহানবী হযরত মুহাম্মদ(স.) জন্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন।এই মাসেই ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ করা হয়।এই মাসে তিনি খাদিজা(রা.) আনহু কে বিয়ে করেন।.এই মাসে তিনি মদিনায় হিজরত করেন।

রমজান মাসের চেয়ে রবিউল আউয়াল মাস কেন বেশি ফজিলতপূর্ণ নয়?

ইসলামের অনেক ঘটনাই ঘটেছে ‘রবিউল আউয়াল’ মাসে।কিন্তু তাও কেন এই মাসের চেয়ে রমজান মাসের ফজিলত বেশি?দীর্ঘ অনেক বছরের ধ্যানমগ্ন থাকার পরে এই মাসে আল্লাহর ওহি ‘আল কুরআন’ নাযিল হয়।

আরো পড়ুন..

ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৪ কত তারিখ?

এই মাসেই হযরত মুহাম্মদ (স.) নবুয়ত লাভ করেন।রমজান মাসে ৩০টি ফরয রোজা আছে। তাই এই মাসের ফজিলত বেশি, সওয়াব বেশি।তবে রবিউল আউয়াল মাসের সাথে সোমবারের গুরুত্ব অধিক গুণে বেড়েছে।তাই বছরের প্রত্যেক সোমবার রোজা রাখলে অনেক সওয়াব পাওয়া যাবে।

এছাড়া প্রতি চন্দ্রমাসের 13,14,15 তারিখ রোজা রাখলে পুরো মাস রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়।

রবিউল আউয়াল মাসে আমরা কি কি করতে পারি?

রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত এর জন্য আমরা যা যা করতে পারি

  1. রবিউল আউয়াল মাসে আমরা মিলাদুন্নবির আয়োজনে সাহায্য করতে পারি।
  2. এছাড়া, মিলাদুন্নবির আয়োজনে সবাই স্বামর্থ মতো দান করতে পারি।
  3. এই মাসে মহানবি(স.) এর কোনো সুন্নত কাজ পালন করতে পারি।যেমনঃ দাড়ি না কাটা।
  4. এই মাসে আমরা সকল হারাম কাজ বর্জন করতে পারি।
  5. মহানবি(স.) এর উপর দরুদ পাঠ করতে পারি এবং পাঁচ ওয়াক্ত সালাত নিয়পিত আদায় করা শুরু করতে পারি।

রবিউল আউয়াল মাসে আমরা কোন কাজ থেকে বিরত থাকবে?

আমরা এই মাসে সকল হারাম কাজ থেকে বিরত থাকবে।কুরআন-হাদিসে উল্লেখ নাই এমন কোন আমল করতে যাব না।কারণ এটা হারাম।অনেকেই এই মাসে কিছু দোয়া নিয়মিত পাঠ করার পোষ্ট করতে পারে।আগে চেক করে দেখবেন, এটা হাদিসে উল্লেখ আছে কিনা।অনেক ইহুদি-নাস্তিকরা মুসলমানদের পথভ্রষ্ট করতে ইসলাম সম্পর্কে অনেক গুজব ছড়াতে পারে।তাই এসব গুজবে কান দিবেন না।

শেষ কথা

রবিউল আউয়াল মাস আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস।এই মাসে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ(স.) পৃথিবীর বুক আলোকিত করে এসেছিলেন মানুষকে দ্বীনের পথে, সত্যের পথে নিতে।তিনি অনেক বাঁধার সম্মুখীন হয়েও ইসলাম প্রচার করেছিলেন।তিনি এই মাসে বিবাহ,হিজরত করেছেন।এই মাসে প্রথম মসজিদ তৈরি করা হয়েছে।এই মাসেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।তাই এই মাসে আমরা মহানবির(স) প্রতি শ্রদ্ধা জানাবো।তার প্রতি দরুদ পাঠ করব।আমরা তার দেখানো দ্বীনের প্রতি চলব।

Leave a Reply