রাসেল ভাইপার সাপের ইতিহাস এবং কামড় দিলে করনীয়
বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম আতঙ্কের নাম রাসেল ভাইপার সাপ। যেখানেই যাই শুধু দেখা মেলে রাসেল বাইপার সাপের। কথা হচ্ছে গিয়ে, এক সময়কার বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির এই রাসেল ভাইপার সাপ হঠাৎ এত বেশি পরিমাণে দেখা যাচ্ছে কেন। আরো কয়েক দশক আগে এই রাসেল ভাইবার সাপ বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে রিপোর্ট করা হয়েছিল। তাহলে আবার এই সাপ এলো কোথা থেকে। আর কেনই বা এইসব এত আতঙ্কের বিষয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, রাসেল ভাইপার সাপের ইতিহাস এবং বিস্তারিত তথ্য জানার মাধ্যমে। রাসেল ভাইপার সাপ এর ইতিহাস সম্পর্কে।
পোষ্টের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে- রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ কি, চন্দ্রবোড়া সাপ কামড়ালে কি করা উচিত, চন্দ্রবোড়া সাপ দেখতে কেমন , রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় এবং চন্দ্রবোড়া রাসেল ভাইপার সাপ এর ইতিহাস এবং বিস্তারিত তথ্য
রাসেল ভাইপার সাপ কি
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বিষধর সাপগুলোর মধ্যে এই রাসেল ভাইপার অন্যতম। এটির বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয় Daboia russelii । স্কটিশ বিজ্ঞানী পেট্রিক রাসেল ১৭৯৬ সালে এই রাসেলস বাইফার সম্পর্কে তথ্য দেন। এবং তার নামকরণেই সাপটির নাম করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের চন্দ্রবোড়া সাপে নামেও পরিচিত।
বিস্তার: এটি দক্ষিণ এশিয়ার জুরে বিস্তার করে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো যেমন ভারত, বাংলাদেশ , শ্রীলংকা , পাকিস্তান ও নেপাল এই সকল দেশগুলোতে দেখা যায়। এটি সাধারণত শুকনো ফসলে জমি, খোলা মাঠে অথবা শুষ্ক বসতবাড়িতে দেখা মিলে। বিশেষ করে কৃষকদের জন্য এটি বিপদজনক।
বৈশিষ্ট্য: রাসেল ভাইপার সাপ সাধারণত চার থেকে ছয় ফুট লম্বা হয়। এর শরীর বাদামি এবং দাগ যুক্ত প্যাটার্ন এর মত। মাথা ত্রিভুজ আকৃতির এবং চোখ খাড়া খাড়া।
বিষক্রিয়া : সাধারণত রাসেল ভাইপারের প্রত্যন্ত শক্তিশালী এবং দ্রুত কার্যকরী। এর বিষের ফলে রক্ত জমাট বাঁধা, কিডনি ফেইলিউর এমনকি মৃত্যুরও হতে পারে। এর বিষ ের প্রভাবে মৃত্যুর হার বেশি।
চিকিৎসাগত লাভ: রাসেল ভাইপারের বিষ দিয়ে এমটি ভেনাম তৈরি করা হয়। এই অ্যান্টি ব্যানাম দিয়ে যেকোনো সাপের কামড় থেকে চিকিৎসা করা হয়।
আরো পড়ুন..
চন্দ্রবোড়া (রাসেল ভাইপার) সাপ কামড়ালে কি করা উচিত
রাসেল ভাইপার কামড়ালে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। ওজা বা অন্য কারো কাছে নেওয়া থেকে বিরত থাকেন। ডাক্তারের কাছে নেওয়ার পূর্ববর্তী সময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিবেন।
সাপ কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা
শান্ত থাকুন: আতঙ্কিত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করুন। রোগী যখন আতঙ্কিত হয় পরে তখন তার রক্ত সঞ্চালন বেশি হয়। আর তাই বিশ শরীরের দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অঙ্গ স্থির রাখুন: শরীর নাড়াচাড়া করলে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে হয়। তাই যেখানেই থাকেন বিষক্রিয়া স্থান নিচে রেখে অন্য অঙ্গগুলো উপরে রাখুন। যেমন কারো হাতের তালুতে কামড় দিলে হাতের তালুটির নিচের দিকে রাখতে হবে।
বিষ আটকানো: যে স্থানে কামড় দিয়েছে সেখানের একটু উপরে হালকা করে বান দিন। এতে বিষ শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না।
ক্ষতস্থান পরিষ্কার রাখুন: সাপের কামড় দেওয়া স্থানে কোন ময়লা পরতে দেওয়া যাবে না। পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। পরিষ্কার কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে হালকাভাবে বাধতে পারেন।
আরো পড়ুন..
দ্রুত হাসপাতাল যাবেন: উপরোক্ত কাজগুলো করে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণত 30 মিনিটের মধ্যেই এর বিষক্রিয়া প্রকাশ পায়। এবং আস্তে আস্তে সেটা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই ৩০ মিনিটের মধ্যেই চিকিৎসা নেওয়া ভালো।
সাবধানতা: বিষ অপসারণের চেষ্টা করবেন না। বেশি টাইট করে বাদবেন না। চাপ প্রয়োগ করবেন না। অতিরিক্ত চিন্তা হাই হতাশ হবেন না। কোনরকম ঘরোয়া প্রতিকার নিবেন না। ইলেকট্রিক শখ নেওয়া যাবে না। এই সকল কাজগুলো করলে উল্টো বিপরীত হতে পারে।
চন্দ্রবোড়া সাপ দেখতে কেমন
চন্দ্রবোড়া রাসেল ভাইপার সাপ অনেকটা বাদামি এবং দাগ যুক্ত প্যাটার্ন এর মত দেখা যায়। মাথার অংশটা অনেকটা V আকৃতির হয়ে থাকে। এরা সাধারণত চার ফুট থেকে ছয় ফুট লম্বা হতে পারে। এদের মাথার ত্রিভুজ আকৃতির এবং চোখ খাড়া খাড়া। এদের দেহ অপেক্ষাকৃত মোটা এবং পিঠ থেকে পেটের দিকে ধীরে ধীরে পাতলা হয়ে যায়। তবে অঞ্চলভ ভেবে রাসেল ভাইপার হালকা কিছু পরিবর্তন থাকতে পারে।
আরো পড়ুন..
যে খাবার খেলে রক্ত ও শক্তি বাড়াবে। আপনার খাবার তালিকায় আছে তো?
রাসেল ভাইপার সাপের ছবি
ভবিষ্যতে দেখেই যাতে চিনতে পারি তাই আমাদের কিছু ছবি দেখা উচিত। এতে হয়তো আমরা ভবিষ্যতে সতর্ক থাকতে পারবো।
শেষ কথা: রাসেল ভাইপার(চন্দ্রবোড়া)
চন্দ্রবোড়া রাসেল ভাইপার সাপ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কোথাও দেখতে পেলে না মেরে হেফাজতে নেয়ার জন্য বন বিভাগে জানাতে হবে। নিজে ধরার চেষ্টা করবেন না।
One thought on “রাসেল ভাইপার সাপের ইতিহাস এবং কামড় দিলে করনীয় ”