১৫ দিনে মোটা হওয়ার উপায়

অতি তাড়াতাড়ি মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার উপায় – মোটা হওয়ার কার্যকরী উপায়

স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেওয়া আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক স্বাস্থ্যের জন্য ওজন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের বয়স, উচ্চতা এবং ওজনের উপর ভিত্তি করে আমাদের স্বাস্থ্য নির্ণয় করা হয়। তাই স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য ওজন গুরুত্বপূর্ণ। এই পোস্ট থেকে আমরা জানতে পারবো- অতি তাড়াতাড়ি মোটা হওয়ার উপায়, সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়, মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা, সাত দিনে মোটা হওয়ার উপায় এবং ১৫ দিনে মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে। চলুন গুরুত্বপূর্ণ টিপস টি জেনে আসা যাক।

 

মোটা হওয়ার ফর্মুলা

আমরা প্রায় সবাই মোটা হতে চাই। কারণ আমাদের মধ্যে অধিকাংশই বয়সের তুলনায় অনেক চিকন। তাই সবাই মোটা হওয়ার টিপস সম্পর্কে জানতে চাই। আসলে মোটা হওয়াটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং খারাপ উভয়ই হতে পারে। অতিরিক্ত মোটা হওয়ার ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। আবার অতিরিক্ত চিকেন হওয়ার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তাই আমাদের মোটা আর চিকনের মাধ্যম পর্যায়ে থাকতে হবে। আমাদের বিএমআর এবং বিএমআই সঠিক থাকতে হবে। তাহলে আমরা স্বাস্থ্যবান হিসেবে বিবেচিত হব। এই পোস্টে আমরা আমাদের বিএমআর এবং বিএমআই সঠিক রাখবো কিভাবে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

 

মোটা না হওয়ার কারণ কি

 

কেউ যদি মোটা হওয়ার উপায় জানতে চাই তার অর্থ এই যে ওই ব্যক্তিটি চিকন। মোটা হতে হলে অবশ্যই জানতে হবে চিকন হওয়ার কারণ। কারণ, কোন সমস্যা সমাধান করতে হলে আগে সমস্যাটি নির্ণয় করতে হয়। তাই আমাদের আগে মোটা না হওয়ার কারণগুলো জানতে হবে। সাধারণত কয়েকটি কারণে মানুষের মোটা হওয়ায় বাধাগ্রস্ত হয়।

 

  1. খাদ্যাভ্যাস: সঠিক মাত্রায় খাদ্য গ্রহণ না করা চিকন হওয়ার অন্যতম কারণ। তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার সকল খাবারগুলো খেতে হবে।
  2. জিনগত প্রভাব: পারিবারিকভাবেই অনেকে স্বাভাবিকভাবে চিকন হয়ে থাকেন। তবে এটা তেমন কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না। এমতাবস্থায় নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।
  3. উচ্চ বিপাকীয় হার: কিছু মানুষের শরীরে খাদ্য দ্রুত হজম হয়ে যায়। শরীর থেকে খাদ্য দ্রুত হজম হয়ে গেলে মোটা হতে একটু বেশি সময় প্রয়োজন হয়।
  4. স্বাস্থ্য সমস্যা: হাইপারথাইরয়েডিজম, ডায়াবেটিস, বা অন্যান্য মেটাবলিক রোগ মানুষের চিকন হওয়ার জন্য দায়ী। এজন্য সঠিক রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা করা গুরুত্বপূর্ণ।
  5. শারীরিক ক্রিয়াকলাপ: অনেকে অতিরিক্ত কাজকর্ম করেন। অতিরিক্ত হাটা অথবা ব্যায়াম করার হলে শরীরের ওজন কমে যায়। তাই প্রতিনিয়ত নিয়ম মেনে শারীরিক কার্যকলাপ করা উচিত।
  6. মানসিক চাপ: বর্তমান সমাজে ডিপ্রেশন এর ফলে মানুষ মোটা হতে পারে না। তাই অতিরিক্ত ডিপ্রেশন থেকে মুক্ত হতে সবসময় নির্জন এলাকায় বিশ্রাম নিবেন।
  7. পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব: অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নেন না। যার ফলে তাদের ওজন কমে যেতে পারে। এবং একসময় ভবিষ্যতে অনেক রকমের রোগের আশঙ্কা থাকে।
  8. পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা: দ্রুত হজম হয়ে যাওয়া সহ পরিবর্তন থেকে কিছু সমস্যা হয়ে থাকে। যেগুলো মানুষ চিকন হওয়ার কারণ হিসেবে ধরা যায়।

আরো পড়ুন..

সুস্বাস্থ্যের জন্য কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত?

অতি তাড়াতাড়ি মোটা হওয়ার উপায়

মোটা হওয়ার কার্যকরী উপায়

অতি তাড়াতাড়ি মোটা হওয়ার জন্য প্রথমে আমাদের বেশি পরিমাণে খাওয়া দাওয়া করতে হবে।

  • বেশি ক্যালোরি গ্রহণ: প্রতিদিনের নিয়মমাফিক ক্যালরি গ্রহণের পাশাপাশি ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম বেশি পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করুন। ক্যালরিযুক্ত খাবার যেমন- মাংস, ডিম, দুধ ও মাখন ইত্যাদি।
  • প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: প্রতিদিনের খাবার তালিকা পরিমাণের একটু বেশি প্রোটিন যুক্ত করুন। প্রোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং বিভিন্ন ফল ইত্যাদি।
  • প্রচুর কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট: পরিমাণ মতো চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। চর্বি মানুষের দেহ দ্রুত মোটা করতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বোহাইডেট ও চর্বিযুক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কার্বোহাইড্রেট ও চর্বিযুক্ত খাবার- ভাত, রুটি, বাদাম , তেল ইত্যাদি।
  • নিয়মিত খাবার: প্রতিদিনের সময় মেনটেন করে খাবার খান। আবার যখন খিদে লাগে তখনও খেতে পারেন।

আরো পড়ুন..

আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

উপরোক্ত নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করলে অতি দ্রুতই মোটা হওয়া যাবে।

 

 

সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়

সকালে খালি পেটে কিছু খাবার খেলে খুব দ্রুত মোটা হওয়া যায়। নিচে খাবারগুলোর তালিকা দেওয়া হল।

  1. বাদাম ও মধু: প্রতিদিন সকালে এক চা চামচ মধু এবং এক মুঠো বাদাম খাওয়া যেতে পারে।
  2. কলার মিল্ক শেক: কলা এবং দুধের মিশ্রণে মিল্ক শেক তৈরি করা হয়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মিল্ক শেক খেতে পারেন।
  3. ডিম: সকালের নাস্তায় দুই থেকে তিনটি সিদ্ধ অথবা ভাজা ডিম যুক্ত করতে পারেন।
  4. চিজ এবং বাদাম: দুই তিন টুকরো চিজ এবং এক মুঠো বাদাম খেতে পারেন। যা শরীরের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
  5. মধু ও দুধ: এক গ্লাস দুধের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি শরীরের শক্তি এবং ক্যালরি বৃদ্ধি করে।

আরো পড়ুন..

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সকল টিপস 

উপরোক্ত খাবার গুলো শরীরের ওজন এবং মোটা হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

১৫ দিনে মোটা হওয়ার উপায়

উপরোক্তার নিয়ম গুলো ফলো করলে সহজে মোটা হওয়া যায়। কেউ যদি মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার উপায় জানতে চাই। তাহলে আমি বলব খাদ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।

কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট: ভাত, রুটি, নাস্তা সহ এগুলা আমাদের শরীরের কার্বোহাইড্রেট বৃদ্ধি করে। দ্রুত মোটা হওয়ার জন্য আমাদের উচিত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি করা। এবং তার সাথে ফ্যাট জাতীয় খাদ্য যেমন- দুধ, মাংস, তেল গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।

সাধারণ খাবারের সাথে স্ন্যাক্স: স্নাক্স জাতীয় খাবার যেমন- মিল্ক বাটার, চকলেট ইত্যাদি সাধারণ খাবারের সাথে খাওয়া।

ওজন ট্রেনিং: সপ্তাহে তিন-চার দিন ধরে বিভিন্ন সাধারণ ভারি বস্তু উত্তোলন করার মাধ্যমে ওজন ট্রেনিং করতে পারেন। এতে শরীরের পেশি গঠনে সাহায্য করবে।

 

পর্যাপ্ত বিশ্রাম: প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমান। কখনো ছয় ঘন্টার কম ঘুমানো উচিত নয়।

 

উপরোক্তা নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া এবং কার্যকলাপ করলে খুব দ্রুত ই সঠিকভাবে শরীরের ওজন এবং মোটা হওয়া যাবে।

আরো পড়ুন..

যে খাবার খেলে রক্ত ও শক্তি বাড়াবে। আপনার খাবার তালিকায় আছে তো?

 

সাত দিনে মোটা হওয়ার উপায়

উপরোক্ত নিয়ম কানুনগুলা মানলে আপনি খুব সহজেই মোটা হতে পারবেন। তারপরও যারা মাত্র সাত দিনের মোটা হওয়ার উপায় জানতে চান। তাদের আমি বলব আপনি প্রথমে আপনার চিকন হওয়ার কারণগুলো খুঁজে বের করুন। মাত্র ৭ দিনে মোটা হওয়ার জন্য উপরোক্ত আইটেমগুলোর সাথে নিচের আইটেম গুলো যুক্ত করতে পারেন।

 

অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট: ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। ডাক্তার আপনাকে সঠিক গাইডলাইন এবং নির্দেশনা দিয়ে দিবেন।

পানি এবং তরল পুষ্টি: বেশি পরিমাণে পানি পান করুন। এতে শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো সহজেই বের হয়ে আসবে। যে পদার্থগুলো মোটা হওয়ার জন্য বাধা সৃষ্টি করছে। তার সাথে বিভিন্ন তরল পুষ্টি যেমন- শরবত, আখের জুস ইত্যাদি পান করুন।

 

প্রতিদিনের রুটিন: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায় একটি রুটিন তৈরি করুন। এখানে প্রতিদিনের খাবার তালিকা থেকে অতিরিক্ত খাবার যুক্ত করবে।

 

মিষ্টি এবং দুধ: মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং দুধ একসাথে খাইলে সহজে ক্যালরি বৃদ্ধি হয়।

খাবারের বৈচিত্র্য: একই রকমের খাবার না খেয়ে বিভিন্ন রকমের খাবার খাবেন। কারণ প্রতিটি খাবার শরীরের আলাদা আলাদা খয় পূরণ করে থাকে।

মনের যত্ন: মানসিক চাপ মুক্ত থাকবেন। সব সময় শারীর িক ব্যায়াম করবেন। মাঝে মাঝে ধ্যান করবেন।

 

অতিরিক্ত মাখন ও তেল: খাবারের সাথে অতিরিক্ত মাখানো তেল যুক্ত করবেন। যা খুব সহজে মোটা হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ

খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ: প্রতিদিন কি খাচ্ছেন তা নোট করুন। এবং পর্যবেক্ষণ করুন কোন খাবারটি খাওয়া উচিত।

 

উপরের নিয়ম কানুন গুলো মেনে চলতে পারলে খুব সহজেই মোটা হওয়া সম্ভব। এমনকি মাত্র সাত দিনেই এর ফলাফল পাওয়া যায়।

 

শেষ কথা

আমাদের মোটা হওয়ার দিকে নজর না দিয়ে স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নজর দেওয়া উচিত। অর্থাৎ আমরা নিয়মিত নিয়মমাফিক খাবার গ্রহণ করব। তাহলে শরীর, স্বাস্থ্য, মন সবকিছু ভালো থাকবে। রোগ বেঁধি হওয়ার ঝুঁকিও কম থাকবে। অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার খাওয়ার ফলে বিভিন্ন রোগব্যাধির আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে মানুষের তৈরি খাবারগুলোতে রোগব্যাধির আশঙ্কা থাকে। তাই আমাদের নিয়মমাফিক চলাফেরা ও খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। তাহলে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ মোটা হওয়া সম্ভব।

ট্যাগ: মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা,রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায়, কি খেলে মোটা হওয়া যায় তাড়াতাড়ি, মোটা হওয়ার ঘরোয়া উপায়

ধন্যবাদ

Leave a Reply