ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিশেষ প্রতিবেদন
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় প্রতিবেদন,
ডেঙ্গু হচ্ছে এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। যা এডিস মশার কামড়ে হয়ে থাকে। সাধারণত তিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ গুলো দেখা দেয়। জ্বর, মাথা ব্যাথা ও বমি সহ কিছু লক্ষণের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ প্রকাশ পায়। বাংলাদেশ সহ এশিয়ার কিছু দেশের মধ্যে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেশি। ডেঙ্গু মূলত গ্রীষ্মমন্ডল হয়ে থাকে। ডেঙ্গু রোগ নিয়ে আরো বিস্তারিতভাবে জানতে হলে আমাদের এই পোস্টটি পুরোপুরি পড়তে হবে।। এই পোস্টে থাকবে – ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে রোগ, ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ, ডেঙ্গু জ্বর হলে কি ঔষধ খেতে হবে, ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে, ডেঙ্গু হলে কি খাবার খাওয়া যাবে না এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় প্রতিবেদন ।
ডেঙ্গু রোগ কেন হয়
মশা আমাদের চিরপরিচিত প্রাণীদের মধ্যে একটি। তবে সবার না আমাদের বাঙ্গালীদের জন্য স্পেশাল। কারন আমরা বাঙালি খুবই অসচেতন। আর এই ও সচেতন থাকার জন্য আমরা মশার সাথে নিয়মিত পরিচিত হয়ে আছি। নির্দ্বিধায় আমাদের দেহের চুম্বন বসানোর ক্ষমতা একমাত্র মশারি আছে। এডিস মশা মূলত জমে থাকা প্রাণী গুলোর পচনের পর তৈরি হয়। তাই আমাদের বাংলাদেশে মশা চেনে না এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল।
মশাদের মধ্যে অনেক রকমের প্রজাতি রয়েছে। ছোট , বড় এবং অনেক রকমের কালারের হয়ে থাকে। এই মশাদের মধ্যেই এক প্রকার মশা আছে যাদের বলা হয় এডিস মশা। আর এই এডিস মশাই ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস ছড়ায়। তাছাড়াও এই ডিশ মশা পিতজ্বর নামক আরো একটি রোগের বাহক। ডেঙ্গু জ্বরের কারণই হচ্ছে এডিস মশার কামড়।
আরো পড়ুন..
ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে রোগ
অনেকেই জানতে চান যে, ডেঙ্গু ছোঁয়াচে রোগ কি না? আসলে ডেঙ্গু জ্বর ছোআছে রোগ কিনা তা জানতে হলে আমাদের ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার কারণটি জানতে হবে। আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। আমরা এটাও জেনেছি ডেঙ্গু জ্বর ভাইরাসজনিত রোগ । অর্থাৎ ভাইরাসের কারনে ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। এখানে বিষয়টা আছে এরকম- এডিস মশা ভাইরাস যুক্ত থাকে। যার ফলে মশাটি যদি কাউকে কামড়ায় তখন ওই ব্যক্তির ডেঙ্গু জ্বর হবে। আবার ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির গায়ে যদি কোন মশা কামড় দেয় আর ওই মশাই যদি অন্য একজন সুস্থ ব্যক্তির দেহে কামড় দেয়। তাহলে ওই সুস্থ ব্যক্তি ও ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত হতে পারে। পুরো বিষয়টি রক্ত সংবহনের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
ছোঁয়াচে রোগ দুই ধরনের হয়। একটি হচ্ছে একে অপরের স্পর্শ এলে আর অপরটি হচ্ছে একের রক্ত অন্যের রক্তে মিশ্রণ হলে। এখানে যদি ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তি ও সুস্থ ব্যক্তির দেহের রক্ত মিক্স হয়ে যায়। তাহলে ডেঙ্গু জ্বর হতে পারে। অতএব বলা যায় যে ডেঙ্গু জ্বর একটি ছোঁয়াচে রোগ।
ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ
ডেঙ্গু একটি মারাত্মক রোগ। তাই এর থেকে আমাদের বাস্তব প্রতিকার ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
প্রতিকার:
- প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে
- প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা করতে হবে।
- নিয়মিত ব্লাড চেক করতে হবে।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে।
প্রতিরোধ:
- আমাদের আশেপাশে চারদিকে পানি জমতে থাকা দেওয়া যাবে না।
- ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা।
- অতিরিক্ত পরিমাণে মশা থাকলে মশা নিধন অভিযান কার্যক্রম করতে হবে।
- ডেঙ্গু সংক্রান্ত নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। যাতে জনগণ সচেতন হয়।
আরো পড়ুন..
যে খাবার খেলে রক্ত ও শক্তি বাড়াবে। আপনার খাবার তালিকায় আছে তো?
ডেঙ্গু জ্বর হলে কি ঔষধ খেতে হবে
ডেঙ্গু জ্বর হলে সর্বপ্রথম কথা আছে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে। সাধারণত বর্ষার সিজনে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি থাকে। ওই সময় যদি ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ গুলো দেখা যায় তাহলে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রক্ত চেকআপ করতে হবে।
এর পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগ হলে প্যারাসিটামল, ওরস্যালাইন ও অন্যান্য ব্যথা নাশক ঔষধ খেতে পারেন। এর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় ( যেমন, ডাব ) খাওয়া যেতে পারে।
ডেঙ্গু হলে কি খাবার খাওয়া যাবে না
ডেঙ্গু জ্বর হলে কিছু খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। কেননা এই খাবারগুলা পরবর্তীতে ডেঙ্গু রোগের ভয়াবহতা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। ডেঙ্গু রোগ হলে চর্বি ও তৈল যুক্ত, মসলাযুক্ত ঝাল, ক্যাফেইন যুক্ত বা কফি, অ্যালকোহল ও মিষ্টি যুক্ত খাবার ইত্যাদি খাদ্যাভ্যাস থেকে পরিহার করতে হবে। এগুলোর পরিবর্তে খুবই সাদামাটা খাবার, তরল জাতীয় খাবার এবং প্রকৃত খাবার খাওয়া যেতে পারে।